সাকিব , সদর উপজেলা কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের সব শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে রাত্রীযাপনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা থাকলেও কোমলমতি পথশিশুদের সেই সুযোগ নেই। তাদের কপালে জোটেনা মা-বাবা‘র সাথে নিরাপদে রাত্রীযাপনের। নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা না থাকায় শীত-গ্রীষ্ম-বষার্য় তাদের চোখ বেঁাজার ঠাই হয় শহরের বিভিন্ন মার্কেটের বারান্দা, ফুটপাত অথবা রাস্তার অলি-গলিতে।
এই অবস্থায় ছিন্নমূল শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এগিয়ে এসেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন। তিনি শহরের মোটেল রোডস্থ বিজয় স্মরণী এলাকার আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল সংলগ্ন সরকারী জায়গায় পথশিশুদের জন্য একটি সেল্টার নিমার্ণ করছেন। যেখানে পথশিশুরা নিরাপদে রাত্রী যাপন, লেখাপড়া, চিকি’সা, বিনোদন ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মত মানুষ হওয়ার ব্যবস্থা রেখেছেন।
কিন্তু এই মহান কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বশির আহম্মদের পক্ষে মোবারক আলী নামে এক ব্যক্তি। যিনি সরকারী জায়গাকে নিজের জায়গা দাবী করে দখলের চেষ্টার মাধ্যমে পথশিশুদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নিমার্ণে বাধা দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, সরকারী জায়গা কারো সম্পত্তি হতে পারেনা। সব শিশুরা যদি নিরাপদে ঘুমাতে পারে তাহলে পথশিশুরা কেন পারবেনা। আইনী পক্রিয়া শেষে সরকারী জায়গায় উপর‘ই পথশিশুদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নির্মিত হবে।
কক্সবাজার শহরের পথশিশুদের কল্যানমূলক সংগঠন ‘নতুন জীবন‘ এর সভাপতি ওমর ফারুক হিরু জানান, এই শহরে থাকা দুই‘শতাধিক পথশিশুদের মাঝে প্রায় অর্ধেক পথশিশু‘র নিরাপদ রাত্রী যাপনের ব্যবস্থা নেই। তারা শহরের বিভিন্ন মার্কেটের বারান্দা, ফুটপাত অথবা রাস্তার অলি-গলি‘তে ক্লান্ত শরীরে কোনভাবে রাত কাটানোর চেষ্টা করে। যেখানে মশার কামড়, বৃষ্টি আর শীতে ঠিকমত ঘুমাতে পারেনা। তার মধ্যে গভীর রাতে দুষকৃতিকারীরা কোমলমতি পথশিুদের নানা ভাবে নিযার্তন করে। তাদের উপর চলে অমানবিক অত্যাচার। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা শিশুদের নিরাপদ রাত্রী যাপন ও আশ্রয় কেন্দ্র করে দিচ্ছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন। ওই সেল্টারে আশ্রয়ের পাশাপাশি শিশুদের লেখাপড়া, আত্মনির্ভরশীল হতে কারিগরি শিক্ষা, চিকি’সা, বিনোদন সহ একজন শিশু‘র প্রাপ্ত অধিকার দিয়ে মানুষের মত মানুষ হওয়ার ব্যবস্থা থাকছে। সরকারী জায়গায় পথশিশুদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নিমার্ণের খবর ছড়িয়ে পড়ায় আনন্দিত শহরের ছিন্নমূল পথশিশুরা।
এই সেল্টার যদি না হয় তাহলে শত শত পথশিশু‘র ভবিষ্য’ বরাবরেই অনিশ্চিত‘ই থেকে যাবে। ভেঙ্গে যাবে মানুষের মত মানুষ হওয়ার স্বপ্ন। তাই কেউ যদি এই মহান কাজে বাধা দেয় তার চেয়ে খারাপ লোক আর কেউ হতে পারে। তাদের কারণ শত শত পথশিশুদের হতে যাওয়া আলোকিত জীবন অন্ধকারে রয়ে যাবে।
পথশিশুদের জন্য সেল্টার নিমার্নের জায়গায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয় কেন্দ্রের অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষের পথে। কিন্ত আগের দিন রাতে আদালত কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বলে একটি ব্যানার টাঙ্গানো হয়েছে। ওই ব্যানারে লিখা আছে আদাললের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ স্থগিত করা হয়েছে। বশির আহম্মদের পক্ষে মোবারক আলী নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এই রিট করেন।
এ ব্যাপারে মোবারক আলীর পক্ষে অত্র রিটকারী আইনজীবি এস.এম জুলফিকার আলী জুনু‘র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ০৪-০৮-২০১৯ ইং তারিখ জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিলীয় আবেদনগুলি নিস্পতি না হওয়া পর্যন্ত সরাসরি স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং আইনানুগ প্রক্রিয়ায় যেভাবে যায়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন জানান, ‘ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা পথশিশুদের সেল্টারের জন্য নিধার্রিত জায়গাটি সরকারী জায়গা। ওই জায়গায় পথশিশুদের আশ্রয়ের জন্য কাজ চলছে। ওখানে হঠা’ করে একটি পক্ষ রিট করেছে দেখলাম। তাই আপাত মহামান্য আদালতের নির্দেশনা অনুযাযী আদেশ মান্য করা হচ্ছে। তবে আমরা আদালতে প্রতিকার চেয়ে দ্রুত আইনী পদক্ষেপ নেব। আমরা এখনো বিশ্বার করি এইটা আমাদের জায়গা এবং ওখানে পথশশুদের জন্য সেল্টার হবে। আর যদি প্রমাণিত হয় যে যারা অন্যায় ভাবে মামলা মোকাদ্দমায় ফেলে হয়রানি করছে এবং একটি ভাল কাজে নিরু’সাহিত করছে পরবতর্ীতের তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে এবং আমরা তাই করব।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টোয়েন্টিফোর।
Leave a Reply